ইমেজ বা ভিডিওতে লোগো বসাবেন কীভাবে?


আপনি যদি উদ্যোক্তা বা ব্যাবসায়ী হোন অথবা ফটোগ্রাফি,  ভিডিওগ্রাফিতে পারদর্শী হোন এবং আপনার পণ্য বা সৃষ্টিগুলোকে আপনি যদি নিজের স্বত্বাধিকারে রেখে সবার কাছে পৌ্ছে দিতে চান, তবে লোগো ব্যবহার আপনার জন্যে অত্যন্ত প্রয়োজন।

কারণ, চোর কিন্তু চুরি কর‍তে কোনো পারমিশন নেয় না ভাই। আপনার সৃষ্টি আপনার অগোচরে  কখন যে কোন ভদ্রলোক(!) এসে নিয়ে যাবে আর নিজের বলে চালিয়ে দেবে, আপনি টেরই পাবেন না।
তাই নিজের পণ্য বা সৃষ্টির সেফটি কিন্তু নিজেকেই দিতে হবে। এখন এন্ড্রয়েডের মাধ্যমেই খুব সহজে লোগো ব্যবহার করা যায়। আমি তো এন্ড্রয়েড  দিয়েই আমার করা পণ্যের ছবি / ভিডিওতে লোগো বসানোর কাজ করে ফেলি।
এন্ড্রয়েড থেকে আমার সৃষ্টিতে লোগো বসাতে  আমি বেশ কিছু ফ্রী সফটওয়্যার ব্যাবহার করেছি।
যেমন Logolicious, Watermark, Water Maker ইত্যাদি।

আজ আমি Add Water mark app নিয়ে কিছু কথা বলবো।

এই অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর থেকে ফ্রী ডাউনলোড করে নেয়া যাবে। তবে প্রিমিয়াম অপশনও আছে। আমি ফ্রী অ্যাপ থেকেই কাজ করি।

শুরুতে অ্যাপটি ওপেন করলেই চারটি অপশন আসবে।

  1. Creat Water Mark
  2. Apply on Images
  3. Apply on Video
  4. Your Creation
  • Creat Water Mark:

আগে থেকে যদি লোগো বানানো না থাকে তবে create water mark অপশন দিয়ে সুবিধামতো সহজ ডিজাইনের লোগো বানিয়ে নেয়া যাবে।  Art, Text, Background,  Effect, Image এই অপশনগুলো দিয়ে লোগো ডিজাইন করা যায়। Art অপশনটিতে অসংখ্য স্টিকার দেয়া আছে, যেখান থেকে পছন্দমতো স্টিকার লোগো হিসেবে বাছাই করে নেয়ার সুযোগ আছে।

Water Mark অ্যাপ স্টোর থেকে লোগো বানানো


Text এর মাধ্যমেও নিজের নাম, উদ্যোগের নাম বা প্রতিষ্ঠানের নাম  টাইপ করে লোগো করা যাবে। পছন্দমতো Font আর Colour দিয়ে টেক্সট  কাস্টমাইজড করার সুযোগ আছে। আছে opacity-র মাধ্যমে টেক্সট এর স্পষ্টতা বাড়ানো কমানোর সুবিধা।
কাস্টমাইজড স্টিকার / টেক্সটটি পছন্দমতো ব্যাকগ্রাউন্ড এর উপর বসানো যাবে এখানকার Background অপশন দিয়ে।
এছাড়া effect ব্যাবহার করেও ব্যাকগ্রাউন্ড আকর্ষণীয় করে তোলা যায়।

লোগো হিসেবে টেক্সট


Image অপশন এর কাজ হলো, যদি আগে থেকে গ্যালারিতে লোগো JPG, PNG আকারে সেইভ করা থাকে, তবে সেই ইমেইজটিই লোগো হিসেবে এখানে ব্যাবহার করা যাবে। চাইলে গ্যালারির যেকোনো ছবিই এই অ্যাপের মাধ্যমে নিচের ভিডিওটির মতো এডিট করে লোগো হিসেবে ব্যাবহার করা যাবে।

ইমেজকে লোগো বানানো
  • Apply on Images:
  • Apply on video:

দ্বিতীয় ও তৃতীয়  অপশন হলো, Apply on Images এবং  Apply on Video.
এ অপশনগুলোর মাধ্যমে কাংখিত ছবি / ভিডিওর উপর লোগো বসানো যাবে। অপশনে ক্লিক করলে এন্ড্রয়েড স্ক্রিনে প্রথমেই তার গ্যালারি চলে আসবে। তারপর কাংখিত ছবি / ভিডিও  সিলেক্ট করে আগে থেকে সেইভ/ ক্রিয়েট  করে রাখা লোগোর ছবিটি সিলেক্ট করতে হবে। লোগোটিকে ছবি বা ভিডিওর পছন্দমতো জায়গায় বসানো যাবে এবং লোগো ছোটো বড় করা যাবে।এখানে একসঙ্গে পাঁচটি পর্যন্ত ছবি  এবং ভিডিওর ক্ষেত্রে একটিতে লোগো বসানো যাবে। চাইলে লোগোটি মডিফাইও করা যাবে। নিচে বাম দিকে কোনায় control অপশনে ক্লিক করে Opacity বাড়ানো কমানোর মাধ্যমে লোগোর স্পষ্টতা বাড়ানো কমানো যাবে। সেই সাথে চাইলে এনিমেটেড লোগোও তৈরি করা যাবে।

উদাহরণস্বরূপ, একটি ভিডিওর উপর কী করে লোগো বসানো যায় তা নিচের ভিডিওটিতে করে দেখানো হয়েছে ।

একটি ভিডিওতে লোগো বসানো হচ্ছে।

কাংখিত ছবি বা ভিডিওতে লোগো বসানোর কাজ শেষ হলে স্ক্রিনের একদম উপরে ডানদিকে কোনায় যে তীর চিহ্নটি থাকে সেখানে ক্লিক করলেই ছবি মেমরিতে সেইভ হয়ে যাবে।

তীর চিহ্নে ক্লিক করলেই সেইভড।

আর Your creation অপশনটিতে ক্লিক করলে   Add WaterMark এর মাধ্যমে করা নিজের সব কাজ দেখা যাবে। এই অ্যাপ এর মাধ্যমে সরাসরি বিভিন্ন সোশাল মিডিয়াতে পোস্ট করার সুযোগ রয়েছে।

আরেকটি কথা,  এই অ্যাপের কিছু কিছু স্যাম্পল ব্যাবহার  করতে অনলাইনে থাকতে হয়। বিভিন্ন এড দেখার মাধ্যমে এই স্যাম্পলগুলো ব্যাবহার করার পারমিশন পাওয়া যায়। তবে অফলাইনে থাকলেও লোগো বানানো ও ব্যাবহার করা সম্ভব । এই অ্যাপের প্রিমিয়াম ভার্সনও আছে।

একটি দেশ কেন ইচ্ছামতো নোট ছাপিয়ে ধনী হয়ে যায় না?


ইশ….. যদি একটা টাকার গাছ থাকতো! কি যে ভালো হতো! ইচ্ছা হলেই গাছ ধরে ঝাঁকাতাম। আর টাকার পাতা গুলো ঝড়ে ঝড়ে পড়তো! সেই টাকাগুলো কুড়িয়ে নিতাম। তারপর যা ইচ্ছা তাই করতাম!
কেন যে টাকার গাছ হলো না! ধুর!
ছোটোবেলা থেকে এই চিন্তা কি কখনও মাথায় আসে নি কারও? অবশ্যই এসেছে। আমার মতো আরও অনেকে মাথাতেই এই চিন্তা এসেছে!
টাকার গাছ তো নেই! তাহলে টাকা আসে কোত্থেকে? টাকা বা মুদ্রা আসে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের নির্দেশে দেশের চাহিদা অনুযায়ী টাকা বানায়। কিন্তু সরকার চাইলেই তো যত ইচ্ছা তত টাকা বানিয়ে নিতে পারে! টাকা আর তেমন কি! প্রিন্ট করা কতগুলো কাগজই তো! তাহলে কেনো সরকার বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইচ্ছা মতো টাকা বানায় না? এটাও কিন্তু একটা ভাববার বিষয়।
তাহলে একটু চিন্তা করে দেখি , এই প্রশ্নগুলোর সন্তোষজনক কোনো উত্তর পাওয়া যায় কি না!

ধরা যাক বাসায় জন্মদিনের পার্টি হচ্ছে। ১০০ লোকের আয়োজন। তাই বিশাল একটি কেক আনা হলো। কিন্তু পার্টি টাইমে দেখা গেলো লোক সংখ্যা আরেকটু বেশি। ১১০। এবার কী করা যায়? যে কেকটিকে ১০০ পিস করার কথা ছিলো সেটি এখন ১১০ পিস করলেই তো হয়ে যাবে, তাইনা? অর্থাৎ লোকসংখ্যা বাড়লেও ভাগ করতে হবে কিন্তু সেই একটি কেকই। এখানে উদাহরণে থাকা একটি কেক হলো দেশের সম্পদ আর লোকসংখ্যা হলো সম্পদের মূল্য। অর্থাৎ টাকা ছাপিয়ে যতই বাড়ানো হোক না কেন সম্পদের পরিমাণ তো একই থেকে যাবে। ফলে যা হবে তা হলো, পণ্যের বিপরীতে তার দাম বেড়ে যাবে। ঠিক যেমন পুরো একটি কেকের বিপরীতে লোকসংখ্যা বেড়ে গিয়েছিলো।

এবার আসি বৈদেশিক লেনদেনের বিষয়ে। ধরা যাক আমাদের দেশে মোট পাঁচটি স্বর্ণের বার আছে যাদের মূল্য প্রতিটি ২০ টাকা করে মোট ১০০ টাকা । এইদিকে ডলারের হিসেবে এই বারগুলোর মোট মূল্য ধরা যাক ৫০ ডলার। তাহলে কী হলো? আমাদের ১০০ টাকা বৈদেশিক ৫০ ডলারের সমমান। এইক্ষেত্রে আমরা যদি ডলার কিনতে যাই, আমাদের কে কিন্তু প্রতি ডলারের বিপরীতে ২ টাকা করে দিতে হবে।
এখন সরকার হঠাৎ করে অর্থ ছাপিয়ে দেশের অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে দ্বিগুন করে ফেললো। এবার আমাদের সেই ৫ টি বারের মূল্য দাঁড়াবে ২০০ টাকা। এদিকে ডলারের হিসেবে কিন্তু ৫০ ডলারই আছে। তাহলে কী দাঁড়াবে? প্রতি ডলারের মূল্য বেড়ে এখন হয়ে যাবে চার টাকা। এভাবে প্রতি বৈদেশিক মুদ্রার মূল্যই কিন্তু দেশের মুদ্রার হিসেবে বেড়ে যাবে। বৈদেশিক মূদ্রার মূল্য বেড়ে যাওয়া নিশ্চয়ই কোনো দেশের জন্যে সুখকর না। কারণ দেশের যত উন্নয়ন মূলক কাজ বৈদেশিক ঋণ নিয়ে করা হয় সব তো বৈদেশিক মুদ্রার হিসেবেই হয়। তাহলে, দেশের নিজস্ব মুদ্রা বা টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে ঋণ কিন্তু সেই বেশি মূল্য হিসেবেই পরিশোধ করতে হবে । আদতে দেশের টাকা বেড়ে গেলে সবাই ধনী হয়ে যাবে এরকম ব্যাপার কিছু ঘটবে না।
মাঝখান থেকে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা নিয়ে আমাদের ঘুরতে হবে। যে কোনো কিছুর মূল্য হিসেবে অনেক অনেক টাকা পরিশোধ করতে হবে। কেমন হবে যদি একটি কলম কিনতে গেলে এক বস্তা টাকা দিতে হয় দোকানীকে? যেহেতু অনেক অনেক টাকার বিপরীতে প্রতিটি পণ্যের মূল্য অনেক অনেক বেড়ে যাবে।

জিম্বাবুয়ের কয়েকটি ছবি দেখা যাক চলুন, যেখানে জিম্বাবুইয়ানদের শিশু থেকে শুরু করে সবার হাতে অনেক অনেক জিম্বাবুইয়ান ডলার। তারা সবাই বিলিয়নিয়ার। ঠেলাগাড়ি, ঝুড়িতে করে টাকা বহন করছে এতো টাকার মালিক তারা।

এই শিশুটিও কত্ত টাকার মালিক!
টাকার অভাব নাই।

ছবির মতো করে এইভাবে এতো এতো টাকা বহন করা তো ভীষণ ঝামেলার। এক্ষেত্রে অনেক বড় বড় অংকের নোট ছাপালেই তো আর বস্তা বস্তা টাকা নিয়ে ঘুরতে হয় না, তাই না? বিলিয়ন ট্রিলিয়ন নোট দিয়ে আমরা লেনদেন করবো। তখন হয়তো একজন দিনমজুর, শ্রমিক থেকে শুরু করে প্রথম শ্রেনীর নাগরিক সবাই হয়ে যাবো বিলিয়নিয়ার, ট্রিলিয়নিয়ার। আমরা যখন উপার্জন করবো, দেশে অনেক টাকা থাকায় তখন শ্রম বা মেধার বিনিময়ে বেশি টাকাই উপার্জন করবো। এই বেশি টাকা হয়তো নোটের দিক থেকে অনেক মনে হবে কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তা হবে নগণ্য।

ঠিক যেমন ঘটনা ঘটে আসছে জিম্বাবুয়েতে সেই ২০০৮ সাল থেকে। একজন শ্রমিক জিম্বাবুইয়ান ডলারে ২০০ বিলিয়ন জিম্বাবুইয়ান ডলার মজুরি পেলেও, মার্কিন ডলারে তার মূল্য ছিলো মাত্র ৬০ সেন্ট। হাসপাতালের একজন নার্সের বেতন ১২ হাজার ৫৪২ জিম্বাবুইয়ান ডলার হলেও মার্কিন ডলারে তার পরিমাণ ছিলো মাত্র ১২ সেন্ট। এইরকম প্রতিটি পেশায়ই বিলিয়ন ট্রিলিয়ন জিম্বাবুইয়ান ডলার পাওয়া গেলেও আন্তর্জাতিক বাজারে তার মান ছিলো খুবই নগণ্য। অথচ এক টুকরো রুটি কিংবা এক কাপ চা খেতে চাইলে ঝুড়ি ভর্তি টাকা নিয়ে যেতে হয়।

জিম্বাবুয়ে সরকার এই সমস্যা সমাধানের জন্যে ৫০ বিলিয়ন জিম্বাবুইয়ান ডলার, ১০০ ট্রিলিয়ন জিম্বাবুইয়ান ডলারের মতো অনেক বড় বড় নোটের মুদ্রা ছাপিয়েছিলো। যাতে করে জনগণ অনেক বড় বড় মুদ্রা ব্যবহার করে তাদের দৈনন্দিন লেনদেন চালাতে পারে। এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে এই মুদ্রার মান ছিলো একদম কম। ১ এর পর ১৪ টি শূণ্য বসিয়ে, সবচেয়ে বড় যে জিম্বাবুয়ের ডলার বানানো হলো, ইউ এস ডলারে তার পরিমাণ সামান্য। কি ভয়ঙ্কর না?

১ এর পর মাত্র ১৪ টি শূণ্য দিয়ে ছাপানো সবচেয়ে বড় নোট।

তাহলে আমরা দেখলাম, অনেক নোট ছাপানো হলে দেশের মুদ্রাস্ফীতি চরম পর্যায়ে গিয়ে ঠেকবে।

এবার সরকার যদি ভাবে, যে কোনো ভাবেই হোক দেশে মুদ্রাস্ফীতি হতে দেবে না, কিন্তু অধিক পরিমাণ মুদ্রা ছাপিয়ে জনগণকে সরবরাহ করে তাদের দারিদ্র্য দূর করবে।তখন মুদ্রাস্ফীতি ঠেকাতে হয়তো সরকার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বাড়তে দেবে না।ফলে কী হবে? সবার কাছে বিপুল টাকা থাকার কারণে সবার ক্রয় ক্ষমতা বেড়ে যাবে। তারা অল্প সময়ে বাজারের সব নিত্যপণ্য কিনে ফেলবে। ফলে বাজারের এই পণ্যগুলো দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যাবে। প্রয়োজনে হয়তো হাতে অনেক টাকা থাকবে কিন্তু কেনার মতো পণ্য বাজারে থাকবে না। তখন হয়তো নিজেদেরকে জিম্বাবুইয়ানদের মতো ” Starving Billionaire” প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় দাঁড়াতে হবে।

তখন হয়তো মনে হবে, ভাই আর বেশি টাকা চাই না, আমরা ঠিকমতো খেয়ে পরে একটু বাঁচতে চাই। বোঝা যাবে, ধনী হতে টাকা নয়, শ্রম আর মেধার ব্যবহার কতটা জরুরি।

এবার একটু ভেনিজুয়েলার দিকে তাকানো যাক। ২১ আগস্ট, ২০১৮ তারিখে BBC এর একটি প্রতিবেদনে রয়টার্সের ফটোগ্রাফার কার্লোস গার্সিয়া রলিন্স এর তোলা কয়েকটি ছবি প্রকাশ করা হয়। যেখানে দেখা হয়েছে, প্রতিদিনের খাবার আর ব্যবহার্য দ্রব্যের বিপরীতে ভেনিজুয়েলা বাসিন্দাদের কত বলিভার খরচ করতে হয়।

তাদের অত্যাধিক মুদ্রা ছাপানোর ফলে পণ্যের দাম এতো বৃদ্ধি পেয়েছে যে, ভেনিজুয়েলার বেশিরভাগ মানুষই বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে এখন আর তাদের দেশীয় মুদ্রা বলিভার ব্যাবহার করছেন না। তারা মার্কিন ডলার, ইউরো, ক্রিপ্টোকারেন্সি বা বার্টারিংয়ের দিকে ঝুঁকছেন। ফলে ভেনিজুয়েলার দেশীয় মুদ্রা বলিভার এখন অচল মুদ্রায় পরিণত হয়ে যাচ্ছে।

১৯২৩ সালের কথা। ফরাসি আক্রমনের পর পর। ঐ সময়টায় ওয়েমার ( আধুনিক জার্মান সরকার) সৈন্য, বন্দুক এবং গোলাবারুদের অর্থ প্রদানের জন্য তৎকালীন জার্মান মুদ্রা “পেপারমার্ক” অবাধে ছাপিয়েছিল। এর ফলে তাদের অর্থনৈতিক সুবিধা তো হয়ই নি। বরং সার্বিক মূল্য কমেছে। ১৯২২ সালে, যেখানে একটি রুটির দাম ১৬৩ মার্ক ছিল, ১৯২৩ সালের নভেম্বরে, সেখানে একটি রুটির দাম হয়ে যায় ২০০,০০০,০০০,০০০ মার্ক। এই “পেপারমার্ক” পরবর্তীতে এতোটাই মূল্যহীন হয়ে পড়ে যে, বাচ্চারা সেগুলো দিয়ে খেলতে শুরু করে।

সূত্রঃ https://historydaily.org/germany-hyperinflation





https://historydaily.org/germany-hyperinflation

তার মানে বোঝা যাচ্ছে, ধনী হবার জন্যে বিপুল পরিমাণ মুদ্রা বা টাকা তৈরি করে জনগণের মাঝে সরবরাহ করা কোনো বুদ্ধির কাজ নয়। বরং একটি দেশের অর্থনীতির জন্যে ভয়ংকর পরিণতি। অর্থনৈতিক সমস্যা কাটিয়ে উঠার জন্যে যে মুদ্রা ছাপানো হবে, তা দেশকে অর্থনৈতিক ভাবে এতোটাই বিপর্যস্ত করে তুলবে যে সরকার হয়তো সেই মুদ্রা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হবে।

অনেক বেশি টাকা জনগণের হাতে পৌছালে বিলিয়নিয়ার ট্রিলিয়নার হওয়া সহজ, কিন্তু দিন শেষে হয়তো সেই মুদ্রাগুলো অচল মুদ্রায় পরিণত হবে।

পরিশেষে, টাকা বা মুদ্রা হলো সম্পদের মূল্য পরিমাপের একটা মাধ্যম মাত্র। আর্থিক অবস্থা পরিবর্তনের মাধ্যম নয়। তাই দেশের দারিদ্র্য কমাতে হলে, আর্থিকভাবে লাভবান হতে চাইলে দেশের মোট সম্পদের পরিমাণ বাড়াতে হবে। নিজেদের মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে সম্পদ তৈরি করতে হবে। পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পরিকল্পিত আমদানি, রপ্তানির মাধ্যমে আয় উপার্জন আর সম্পদ বাড়াতে পারলেই দেশের আর্থিক ও সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব।

এখন তো বলতেই হয়, ভাগ্যিস টাকার গাছ নাই৷ ভাগ্যিস টাকা বানানোর মেশিন থাকা সত্বেও সরকার ইচ্ছামতো টাকা ছাপায় না!

“লার্ণিং লং ফর্ম কন্টেন্ট রাইটিং উইথ প্রলয় হাসান” সমাচার


কন্টেন্ট মানে কি? কন্টেন্ট মানে লেখালেখি। কোনো একটা বিষয়বস্তু ধরে লিখলেও কনটেন্ট। আবার নিজের এলোমেলো ভাবনা সাজিয়ে লেখাও কনটেন্ট। কনটেন্ট লেখা হতে পারে নিজের জন্যে লেখা। হতে পারে পাঠক টার্গেট করে লেখা। ডায়েরি লেখা, কোনো একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা সমালোচনা, গল্প উপন্যাস কবিতা, নাটক সিনেমা, টিভি স্ক্রিপ্ট সবই কন্টেন্ট এর মধ্যেই পড়ে।
মোট কথা নিজের মতামত ভাবনা চিন্তা যেকোনো কিছুই কনটেন্ট। তবে কেউ যদি পাঠক টার্গেট করে লিখতে চায়, সে ক্ষেত্রে কিন্তু কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়। যেমন, কোন ধরণের বিষয় নিয়ে আমি জানি। কি নিয়ে আমার স্টাডি করতে ভালো লাগে। কোন বিষয়টা নিয়ে আমি পাঠকদের কাছে অনেক তথ্য পৌছে দিতে পারবো। আবার কিছু কিছু কনটেন্ট (যেমন গল্প কবিতা উপন্যাস নাটক সিনেমা) এর বেলায় পাঠক পড়ে আনন্দ পাবে কি না, পাঠকের ভালো লাগবে কি না এই ব্যাপারগুলো দেখতে হয়। আসলে কনটেন্ট শব্দটা ছোট হলেও ব্যাপ্তি কিন্তু বিশাল।
এখন কথা হলো, এই ব্যাপারগুলো জানলাম কেমন করে? ঐ যে লার্ণ কন্টেন্ট রাইটিং উইথ প্রলয় হাসান। ওখান থেকে।
একটু বুঝিয়ে বলি। কয়েকদিন আগে কনটেন্ট রাইটিং এর একটা জব পোস্ট চোখে পড়লো। আগে তো ভাবতাম যা লেখা, তাইই কনটেন্ট (ঠিকই জানতাম)। কিন্তু জব পোস্টে যে যে ক্রাইটেরিয়া ছিলো, তা তো আমি জানি না। মানে কন্টেন্ট রাইটিং মানে আমি যা জানি, তারচেয়েও অনেক বেশি কিছু। কয়েকদিন বেশ ঘা্ঁটাঘাঁটি করলাম। তাও মনে হচ্ছে আরও জানা দরকার। আরও বোঝা দরকার।
কনটেন্ট রাইটিং সম্পর্কে বিশদ ভাবে জানার আগ্রহ যখন প্রবল, তখনই চোখে পড়লো প্রলয় হাসান ভাইয়ার পোস্ট। উনি বাজেট ফ্রেন্ডলি একটা কোর্স করাতে চাচ্ছেন। আমি আর দেরি করলাম না। এনরোল করে ফেললাম।
উনার লেখা অনেক আগে থেকেই আমার পড়া হয়। মনে হলো, প্রলয় হাসান ভাইয়ার ক্লাসে আমি সহজে বুঝতে পারবো।

এই কোর্সে অলরেডি তিনটা ক্লাস হয়ে গেছে। যার মধ্যে ৩য় ক্লাস হলো লং ফর্ম কনটেন্ট রাইটিং এর উপর।
লং ফর্ম কনটেন্ট এর সুবিধা হলো বিশদভাবে পাঠককে বুঝিয়ে বলা যায়। অনেক তথ্য দেয়া যায়।
আগে আমার লেখা পড়ে কেউ কেউ বলতো, তাজিন অনেক বড় লেখা লেখে। আমিও ভাবতাম, লিখতে নিলে ছোটো করে লেখা হয়ই না। শুধু বড় লেখাই হয়ে যায়! এখন দেখি, তাজিনের লেখা দেখে বড় মনে হলেও, লেখাগুলো মোটেও লং ফর্ম না। এগুলো শর্ট ফর্ম কনটেন্টই। লং ফর্ম লেখায় কমপক্ষে ১০০০+ শব্দ থাকতে হয়। বেশিপক্ষের তো কোনো হিসাবই নাই। তবে লং ফর্ম আর্টিকেল সাধারণত ১০০০ থেকে ৭০০০ শব্দের মধ্যেই হয়ে থাকে। এই বিষয়গুলো জানার পর লিখতে গিয়ে দেখি ১০০০+ শব্দ লেখা সহজ কথা না। কতকিছু ভাবতে হয়।
অনেক বড় আর্টিকেল হলে পাঠক অনেক সময় চাইলেও সময়ের অভাবে পড়তে পারে না। হয়তো সেইভ করে পরে আর পড়তে মনেই থাকে না। অনেক সময় ধৈর্য্য থাকে না পড়ার। আবার আর্টিকেল বেশি ছোটো হয়ে গেলে পর্যাপ্ত তথ্য দেয়া যায় না। তাই সাধারণত কোনো লেখা ১৬০০ থেকে ৩০০০ শব্দের মধ্যে লিখতে পারলে সেই লেখাটি ভালো পারফর্ম করে। তবে অনেক প্রথিতযশা কনটেন্ট রাইটার আছেন যাদের লেখা অনেক বড় হলেও পড়তে ভালো লাগে। বিরক্ত লাগে না। ধৈর্য্য নিয়ে ঝামেলা হয় না।প্রলয় হাসান ভাইয়া কিন্তু এই রকম একজন কনটেন্ট রাইটার।
এবার ক্লাসের কথায় আসি। প্রলয় ভাইয়া যেভাবে ক্লাস করান, মনে হয় সবাই মিলে কোনো একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি। বলা যায় আড্ডা দিতে দিতে উনি স্টুডেন্টদেরকে অনেক কিছু শিখিয়ে ফেলেন।
তবে প্রলয় ভাইয়াকে অত সোজাসাপ্টা ভোলাভালা টিচার ভাবার কোনো কারণ নাই। প্রতি সপ্তাহে হোমওয়ার্ক দেন। সেই হোমওয়ার্ক না করলে আবার সমালোচনাও করেন। হোমওয়ার্ক এ ভাইয়া মার্কিংও করেন। মানে হচ্ছে, কনটেন্ট রাইটিং এ এনরোল করেছো। ক্লাস করছো। না জেনে যাবে কই? মনে হতে পারে, এতো বড় বড় স্টুডেন্ট হোমওয়ার্ক করলে করলো, না করলে নাই। কোর্স করলেই হবে। কিন্তু কারও যদি আগ্রহ থাকে, ক্লাস করে, হোমওয়ার্ক জমা দেয় তাহলে তার আর ঐ ব্যাপারে জড়তা থাকার কথা না। প্রলয় হাসান ভাইয়া হয়তো এই ব্যাপারটা মাথায় রেখেই ক্লাস করান। এই ক্লাসে অনেক স্টুডেন্ট আছে যারা ভীষণ সিরিয়াস। চমৎকার চমৎকার লেখে। তারা হয়তো আগে থেকে কিছুটা জানে।হয়তো আরও পাকা হতে এসেছে। কেউ কেউ হয়তো আমার মতোও আছে। আমার মতো নতুন করে অনেক কিছু জানছে।

প্রলয় হাসান ভাইয়ার ক্লাস সম্পর্কে আসলে সমালোচনা করার মতো জ্ঞান আমার নাই। এমন কি পরামর্শ দেয়ার জ্ঞানও নাই। আরও কতগুলো ক্লাস বাকি আছে।যদি বেঁচে থাকি সেখানেও জানা অজানা অনেক বিষয় হাজির হবে আমার সামনে।
শুধু এটুকু বলি, ভাইয়ার ক্লাস করে আমি অনেক কিছু জানছি যা আমার জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করছে। আমি চেষ্টা করবো, আমার এই ক্ষুদ্র জ্ঞাণকে প্রফেশনালি হোক বা পারসোনালি, কাজে লাগাতে।

আমার বই ভাবনা


টেক্সট বইয়ের চেয়ে অন্যান্য বই পড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিলো ছোটোবেলা থেকেই। সুকুমার রায়ের রচনাসমগ্র, শিয়াল পন্ডিত, আরব্য রজনী আর নানান দেশের রূপকথার বইয়ের গন্ডি পেরিয়ে শুরু করলাম তিন গোয়েন্দা। সেই ক্লাস সিক্স এর কথা। তারপর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রতি সপ্তাহের দেশবিদেশের অনুবাদ বইগুলো পড়া। তার অনেক দিন পর ক্লাস টেন এ উঠে শুরু হলো বড় বড় উপন্যাস। কত যে বকা খেয়েছি এই বই পড়া নিয়ে তা আর নাইই বা বললাম। কত কত ভালো লাগার বই আছে। কোনটা রেখে কোনটার নাম বলি। প্রথমদিকের প্রিয় লেখক ছিলেন হুমায়ুন আহমেদ আর মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
তারপর প্রিয় লেখকের তালিকায় যোগ হতে থাকলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, আশাপূর্ণা দেবী। এখন সবচেয়ে ভালো লাগে বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়।
আজ আমি দুইটি উপন্যাস নিয়ে আমার মনের কথা শেয়ার করবো।হুমায়ুন আহমেদ এর “নন্দিত নরকে” আর “পারাপার “। একান্তই আমার চিন্তা থেকে। আমার চিন্তার সংগে অন্য কারও চিন্তা মতামত নাও মিলতে পারে।

প্রথমে উপন্যাস “পারাপার“।

“আমি কোনো মহাপুরুষ নই। আমার কোনো অলৌকিক ক্ষমতা নেই।আমি হিমু। আমি অতি সাধারণ হিমু।”
হিমু! কে না চেনে এই লোককে! একজন নগর পরিব্রাজক যে কি না সারাক্ষণ মহাপুরুষ হবার চেষ্টা করে যাচ্ছে। যে হলুদ পাঞ্জাবি পরে পথে পথে খালি পায়ে হেঁটে বেড়ায়। যার পাঞ্জাবিতে কখনো পকেট থাকে না।
পারাপার উপন্যাসটি হিমু সিরিজের একটি উপন্যাস। হিমু যাদের অসম্ভব প্রিয় চরিত্র, তাদের জন্যে এই বইটা নিঃসন্দেহে ভালো লাগার। অন্যরা পড়লেও কিন্তু ভালো লাগবে।
একজন নিষ্পাপ পবিত্র মানুষের রক্ত খোঁজা নিয়ে এই উপন্যাস এগিয়েছে। ধনকুবের ইয়াকুব আলীর ধারণা, পবিত্র আর নিষ্পাপ মানুষের রক্ত পেলেই তিনি দীর্ঘায়ু লাভ করবেন।
হিমু কি পারবে সেই পবিত্র মানুষটির খোঁজ দিতে?
হিমুর বিভ্রান্ত করার ক্ষমতা অসাধারণ। সে হেলাফেলা করে যা বলে অনেক সময় তাইই সত্যি হয়ে যায়। আবার সিরিয়াসলি কিছু বললে তা হয় মিথ্যা।
কিন্তু তারপরেও সবাই ভাবে হিমু তার অলৌকিক ক্ষমতা দিয়ে হয়তো সমস্যার সমাধান করে ফেলবে।
মৃত্যু পথযাত্রী ইয়াকুব সাহেব সেইরকম বিশ্বাস থেকেই হিমুর খোঁজ করলেন। হিমুও নিষ্পাপ পবিত্র মানুষ খোঁজার দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে ফেল
লো। এদিকে ইয়াকুব সাহেবের একমাত্র মেয়ে মিতু আর অন্যান্যরা ভাবলো হিমু হয়তো বা ইয়াকুব সাহেবের দূর্বলতায় বড় অংকের কোনো সুযোগ নিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু আমরা পাঠকেরা তো জানি হিমু সব ধরনের লোভ লালসার ঊর্ধ্বে।
এদিকে এই দায়িত্ব পাবার পরপরই হিমু একটা খসড়া লিস্ট করে ফেলে। বিশজনের এই লিস্ট ধরে উপন্যাস এগুতে থাকে। এই লিস্ট ধরেই কয়েকজন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। বড় খালা, বড় খালু, ভিক্ষুক একলেমুর মিয়া, ব্যাংকার মনোয়ার উদ্দিন।
আরও আছে লালবাগ থানার সেকেন্ড অফিসার মোহাম্মদ রজব খোন্দকার আর পূর্ত মন্ত্রনালয়ে সিনিয়র এসিস্ট্যান্ট মুনশি বদরুদ্দিন যারা কখনোই ঘুষ খায় নি বলে পরিচিতি আছে।
এই উপন্যাসের তুলনামূলক অনেকটুকু জুড়েই আছে বড় খালা আর বড় খালু। গল্প পড়তে পড়তেই বোঝা যায় তারা আসলেই ভালো মানুষ।
আর ভিক্ষুক একলেমুর এর কিছু দার্শনিক তো কথা তো মনই কেড়ে নেয়। মনে ভাবনার সৃষ্টি করে।
যেমনঃ
“পাপের কোনো বড় ছোট নাই। ছোটো পাপ, বড় পাপ সবই সমান।”
” দুই কিসিমের পাপ আছে। মনের পাপ, আর শরীরের পাপ। ধরেন আমি একটা জিনিস চুরি করলাম। এইটা হইল শরীরের পাপ। চুরি করছি হাত দিয়া। আবার ধরেন মনে মনে ভাবলাম চুরি করব। এইটা মনের পাপ। চুরি না
করলেও মনে মনে ভাবার কারণে পাপ হইল। এই পাপও কঠিণ পাপ।”
কি? ভাবনার উদয় হলো না?
আরও কিছু চরিত্রও এখানে রয়েছে। আলেয়া খালা। উনি কিন্তু হিমুর তেমন পরিচিত নয়। কিন্তু হিমু আলেয়া খালার খুব পরিচিত। আছে আলেয়া খালার মেয়ে খুকী আর নাতনি পলিনের কথা। আছে সুদর্শন যুবক ম্যানেজার মইন, হারানো মানুষ খুঁজে দেয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন করিমসহ আরও কয়েকজন। তাদের অংশ উপন্যাসে খুব অল্প সময়ের জন্যে হলেও ভালো লেগেছে । ড্রাইভার ছামছু যাকে হিমু সামসু ডাকতে চেয়েছিলো। কিন্তু ড্রাইভার সাহেবের ছামছু নামটাই পছন্দ।
অগাধ সম্পত্তির মালিক ইয়াকুব সাহেবের মেয়ে মিতুকে প্রথমদিকে কঠিন স্বভাবের মনে হলেও উপন্যাসের শেষে কিন্তু সে তার কোমলতার পরিচয়ই দিলো।
আর রূপা তো সবসময়ই অসম্ভব মায়াবতী একজন। নিজেকে রূপার জায়গা কল্পনা করতে চাইলে মনে হয়, আমি কখনোই রূপার মতো হতে পারবো না। রূপার জায়গা থেকে হিমুর প্রতি রাগই বেড়ে যায়। অথচ রূপা মেয়েটা হিমুর প্রতি কী তীব্র ভালোবাসা নিয়ে বসে আছে!সে কখনো হিমুর ডাক উপেক্ষা করতে পারে না।
এই উপন্যাসে দেখা যায়,
হিমুর টেলিফোন পেয়ে হসপিটালে ছুটে এসেছে রূপা। এসে দেখে মুনশি বদরুদ্দিন তার মেয়ে কুসুমকে নিয়ে ভীষণ বিপদে। কুসুম ভীষণ অসুস্থ। রূপা ক্লিনিকে গিয়ে সেই অচেনা অজানা ছোট্ট মেয়েটির চিকিৎসার জন্যে নিঃস্বার্থভাবে ছুটাছুটি করছে সারাক্ষণ ।
এইসময় রূপাকে নিয়ে চমৎকার কিছু অনূভুতি প্রকাশ করেছে হিমু।
“আমি ক্লিনিকে ঢুকলাম। লবীতে রূপা বসে আছে। শুধু একটিমাত্র মেয়ের কারণে পুরাে লবী আলো হয়ে আছে। মানুষের শরীর হল তার মনের আয়না। একজন পবিত্র। পবিত্রতা তার শরীরে অবশ্যই পড়বে। সে হবে আলোর মত। আলাে যেমন চারপাশকে আলোকিত করে, একজন পবিত্র মানুষও তার চার পাশের মানুষদের আলোকিত করে তুলবে।”
হিমু একদিন রূপাকে কথা দিয়েছিলো, পরের পূর্নিমায় রূপাকে নিয়ে জোছনা বিলাস করবে। উপন্যাসের শেষ দিকে হিমু জোছনা বিলাসে যায়ও। কিন্তু কাকে নিয়ে যাচ্ছে? হিমু তো সাধারণত রূপাকে দেয়া কথাগুলো রাখে না। তাহলে হিমুর পাশে কে? সত্যিই রূপা নাকি মিতু?
বিশজন থেকে কাটছাঁট করে শেষে কে হলো সেই নিষ্পাপ ব্যক্তি?
ইয়াকুব সাহেব কি করলেন? হিমুর কঠিন শর্ত পূরণ করে পূণ্যবান ব্যাক্তির রক্ত নিলেন?
নাকি শর্ত পূরণ করতে না পেরে নিজেকে মৃত্যুর কাছে সঁপে দিলেন শেষমেশ?

উপন্যাস “নন্দিত নরকে”।


নন্দিত নরকে । নামটা চোখে পড়লেই মনে কেমন একটা অনুভূতি হয়, তাইনা?
“নন্দিত নরকে” হুমায়ুন আহমেদ এর প্রথম উপন্যাস। এক অসাধারণ সৃষ্টি। আমার কিশোরী জীবনে পড়া হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এক উপন্যাস।
পুরো উপন্যাস জুড়ে এমএসসি পড়ুয়া খোকা নামের চরিত্রটি পাঠকের কাছে তাদের জীবনের গল্প শোনায়।মা-বাবা ভাইবোন নিয়ে এক মধ্যবিত্ত পরিবারের খুব হিসাবী জীবন যাপনের গল্প। তার গল্পে চাকরি পাবার স্বপ্ন ছিলো। চাকরি পেলে কি কি করবে সেই গল্প ছিলো।ছিলো রাবেয়া, মন্টু, রুনু, বাবা মা, পাশের বাসার শীলু সবার জন্যে খোকার অপ্রকাশিত গভীর ভালোবাসা। তাদের নিয়েই ছোটো ছোটো স্বপ্ন সাজাচ্ছিলো সে। কত অপেক্ষার পর চাকরি তো পেলোই। চাকরি পাবার পর ওর সাজানো ইচ্ছাগুলো তো পূরণ হতেই পারতো।কিন্তু তা আর হয়ে উঠে না কখনও। উপন্যাসে খোকা তো বাবা মা রাবেয়া মন্টু রুনুকে নিয়েই সুখী হতে চেয়েছিলো।সুখ কাছে এসেও কেন ধরা দিলো না! কেনো এমন হলো! এমন না হলেও তো পারতো। এসব ভেবে খুব খারাপ লাগছিলো তখন।।
উপন্যাস পড়তে পড়তে রাবেয়ার জন্যে কী ভীষণ মায়া হয়। পৃথিবীর হিসাব নিকাশ না বোঝা নিস্পাপ এই মেয়েটাই, পৃথিবীর কদর্য রূপ দেখে ফেললো। কি কষ্ট.. কি কষ্ট! রাবেয়ার পরিণতি পড়ে আমি কেঁদেই ফেলেছিলাম।এই ঘটনা আমার মনে কী গভীর ছাপ যে ফেলেছিলো সেই সময়। একটা উপন্যাসও যে চোখে জল আনতে পারে, তার উদাহরণ হলো এই “নন্দিত নরকে” আর আমি।
উপন্যাসের খোকা, মা-বাবা, রাবেয়া, রুনু, মন্টু সবার জন্যে ভালোবাসা৷ ভালোবাসা পাশের বাসার নাহার ভাবি, শীলু আর হারুনের জন্যে।
আমি উপন্যাস পড়ে মনে মনে খুব চাইতাম, এইরকম যেন সত্যি সত্যিই কারও জীবনে না হয়। এটা যেন শুধু উপন্যাসেই বাধা থাকে।
আমার মনে আছে, আমি তখন সদ্য এসএসসি শেষ করা। এইচএসসি প্রথম বর্ষে ক্লাস শুরু হয়েছে দুয়েকমাস। মনটা এতো খারাপ লাগছিলো যে, একদিন ক্লাস শেষে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে এক বান্ধবীর সংগেও শেয়ার করেছিলাম পুরো উপন্যাসটা। যেন মনের ভার কিছুটা হালকা হয়। ষোলো বছর বয়সটা কম আবেগী বয়স না। ঐ সময়ে এই উপন্যাস মনে দাগ কাটবেই। এখনও নন্দিত নরকে পড়তে পড়তে মনের গভীর থেকে আপনাআপনি দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। উপন্যাসের দুঃখগুলো মাথার ভেতর ঘুরপাক খেতে থাকে। অনেকক্ষণ পর্যন্ত মন কেমন করতে থাকে।
এই বইটা আমার পড়া প্রথম বই, যেটা পড়ে আমি কেঁদেছি। অনেকদিন ধরে বুকের ভেতর হু হু করা শুরু হয় এই বইটা পড়েই। হয়তো এই উপন্যাস পড়েই হুমায়ুন আহমেদ স্যার অনেকদিন ধরে আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখক হয়ে ছিলেন।
আমি তো নন্দিত নরকে পড়ে কেঁদেছি। আপনি কোন বই পড়ে কেঁদেছিলেন?

কনটেন্ট রাইটিং কোর্স উইথ প্রলয় ভাইয়া।


আমি ছোটোবেলা থেকে ডায়েরি লিখতাম। তারপর বড় হয়ে ফেসবুক, ওয়ার্ডপ্রেসে লেখার চেষ্টা করতাম। কনটেন্ট মানেই নাকি লেখালেখি। তার মানে কি? যা লিখবো তাইই কনটেন্ট? এর মধ্যে মাঝেমাঝে কনটেন্ট রাইটিং রিলেটেড জব বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়ে। তখন মনে হয়, আমি যা লিখি তার বাইরেও কনটেন্ট মানে অনেক কিছু। যা আমি জানি না, বুঝি না। এই ব্যাপারগুলো জানার আগ্রহ যখন প্রবল, তখনই প্রলয় হাসান ভাইয়ার পোস্ট চোখে পড়লো। সাধ্যের মধ্যেই উনি একটা কোর্স করাতে চাচ্ছেন। আমিও ঝটপট কোর্সে এনরোল করে ফেললাম। প্রথম ক্লাসে বেসিক ধারণাতেই বুঝলাম, কনটেন্ট মানে অনেক কিছু।

কেউ যদি গল্প, কবিতা, ভ্রমণ বিষয়ে লেখে, সেটা অবশ্যই কনটেন্ট। এছাড়া কোনো প্রোডাক্ট নিয়ে তথ্যভিত্তিক লেখা হতে পারে সেটা বই, ব্যাবহারিক পণ্য বা কোনো ডিভাইস , ওয়েবসাইট কপিরাইটিং, ইমেইল কপিরাইটিং, যেকোনো ধরণের রিভিউ এমন কি নাটক, সিনেমা বা টিভিসি স্ক্রিপ্টও কনটেন্ট। তবে কেউ যদি কনটেন্ট রাইটিং এ সফল হতে চায় তাকে অবশ্যই নীশ ঠিক করতে হয়। আরেকটা বিষয় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তা হলো প্রচুর পড়াশুনা, প্রচুর গবেষণা থাকতে হয়। যে বিষয় নিয়ে আমরা কনটেন্ট লিখবো তা যেন সবার কাছে বোধগম্য আর তথ্যবহুল হয় সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। পাঠক যেন কনটেন্ট পড়ে আরাম পায় বা মনে কোনো ধরণের বিরক্তি না আসে তাও খুব জরুরি। এইরকম খুটিনাটি অনেক বিষয় আলোচনা করা হলো ক্লাসে।

আসলে প্রলয় ভাইয়া খুব সুন্দর ক্লাস নেন। ক্লাস না ঠিক, বলা যায় গল্প করতে করতে অনেক কিছু জানান। পুরো কোর্স করে নিশ্চয়ই আরও ভালো ধারণা পাবো বলে আমার বিশ্বাস।

ধন্যবাদ প্রলয় হাসান ভাইয়াকে আমাদের জন্যে এই সুযোগটা করে দেয়ার জন্যে।

আমার নতুন ক্যামেরা… :D :D :D


– তুই তো খুব ছবি তুলোস, এই জন্যে ক্যামেরাটা পাঠাইলাম।
– হুম ।
– এখন শুধু ছবি তুলবি আর ফেসবুকে আপলোড করবি। এতে কিন্তু অনেক সুন্দর ছবি তোলা যায়। আগেরটার চেয়েও অনেক বেশী ফাংশন আছে। ঠিক করে করে সারাদিন শুধু ছবি তুলবি।
– আচ্ছা ভাইয়া।
– অনেক ভালো ছবি চাই কিন্তু। বেস্ট ছবি চাই।
…………………………………………………………………………………………………………………

– আম্মু, ভাইয়া আমাকে অনেক বেশী বেশী ছবি তুলতে বলছে। যেন বেস্ট ছবি হয়, এই জন্যে।
– এইতো ভালো হইছে। তোর ভাই তোরে ক্যামেরা দিছে। এখন তুই মাঠে ঘাটে, বনে-বাদাড়ে ক্যামেরা কান্ধে কইরা সারাদিন ঘুর।
– সত্যি আম্মু? আচ্ছা ঠিক আছে। মনে থাকে যেন।
– ঐতো। তুই হইছোস নাচুইন্যা বুড়ি, তোর ভাই দেয় ঢোলে বাড়ি। ভাইবোন সব এক ।
………………………………………………………………………………………………………………

কিন্তু ভাইয়া জানো, ক্যামেরাটা হাতে আসার পর সুপার কোনো সাবজেক্ট পাই নাই। ছবি তুলছি অনেকগুলো। বেস্ট তো পরে, ভালোই হয় নাই। যাই হোক ট্রাই করবো। এখন বাসা নিয়ে একটু বিজি। বুঝোই তো..।।

প্রেম এবং বিয়ে


আমার খালাতো ভাই তাওসিফ। বয়স সাত।
গ্রামে নানুর বাড়িতে গিয়ে ওর সাথে দেখা।
হঠাৎ আমাকে বলে,
“তুমি একটা মেয়ে। মেয়ে হয়ে যদি কোনো ছেলের সাথে কথা বলো, তাইলে মনে করবো তুমি ওর সাথে প্রেম করো। তাইলে ওর পুরোটা পড়তে চাইলে

অতঃপর…অপরাজিতা বুঝিলো…ভালবাসা মন্দ নহে……!!


অনেক অনেক কাল আগের কথা।
অপরাজিতা তাহার সমবয়সী, ছোটো, বড় পাড়াতো ভাইবোনদের সহিত বিকালে খেলিতো। বৌ-চি, গোল্লাছুট, ফুল-টোক্কা আরও কত খেলা। সে যদিও খেলা তেমন পারিত না। তাহারপরও তাহাকে সকলেই খেলায় লইতো। সে সবসময় তাহার লিজা বান্ধবীর দলেই থাকিতো। লিজা, কেয়া আর সে একদলে না থাকিলে খেলা ভন্ডুল হইবার উপক্রম হইতো।
যাহাই হোক। আসল ঘটনা এইখানে নহে। পুরোটা পড়তে চাইলে

ক্রিকেট খেলে চক্ষু কানা (প্রায়)


তখন আমরা অনেক ছোটো। আমরা মানে আমার ভাইয়া, আমি আর ইভা।
আমি হয়তো ক্লাস ফোর-ফাইভ। ভাইয়া ক্লাস নাইন-টেন। আর ইভা পিচ্চি। একটু একটু কথা বলে এমন। পুরোটা পড়তে চাইলে

মরার কোকিল!!!!


আজকে দুপুরে ফেসবুকে বসছি। হঠাৎ মনে হলো আমাদের বাসায় কোকিল ডাকছে। একদম আমাদের বাসায়ই। ভাবলাম,বুঝি আমাদের কদম গাছে।
ইভুকে বললাম,
“দ্যাখ তো…আমাদের বাসায় কোকিল আসছে। গিয়ে দ্যাখ্‌ কোথায় আছে। আমি ক্যামেরা নিয়ে আসতেছি।” পুরোটা পড়তে চাইলে

« Older entries

WordPress.com News

The latest news on WordPress.com and the WordPress community.